ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশের জলসীমা সুরক্ষায় আধুনিক যুদ্ধজাহাজ সন্ত্রাস দমনে নৌবাহিনীর বিধ¡ংসী সক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করলেন প্রধা হাসিনানমন্ত্রী শেখ

 ুুুসংবাদ বিজ্ঞপ্তি ::

চট্টগ্রাম ১৯ মার্চ ২০১৬ঃ বাংলাদেশের বিশাল জলসীমার সুরক্ষায় নৌবাহিনীর আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নৌবহরে সংযোজিত হলো নতুন তিনটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ। এ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার (১৯-০৩-২০১৬) চট্টগ্রামের নেভাল বার্থে নৌবাহিনীর নতুন এ তিনটি যুদ্ধজাহাজ ‘সমুদ্র অভিযান’, ‘স্বাধীনতা’ ও ‘প্রত্যয়’ এর কমিশনিং করেন এবং জাহাজ এর অধিনায়কদের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন। এর মধ্য দিয়ে যুদ্ধজাহাজ তিনটি নৌবাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করল। জাহাজ তিনটি নৌবাহিনীতে অন্তর্ভূক্তির ফলে দেশের বিশাল জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্রে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, গভীর সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা বৃদ্ধি, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকসমূহে অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সার্বিকভাবে দেশের ব্লু ইকোনমি উন্নয়নে সহায়ক হবে।

 কমিশনিং এর পরে তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজ, স্পেশাল ফোর্স সোয়াডস এবং নেভাল এভিয়েশনের সম্মিলিত অংশগ্রহণে প্রথমবারের মত চট্টগ্রাম পোর্ট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে সন্ত্রাস দমনে নৌবাহিনীর সক্ষমতার উপর একটি বিশেষ নৌ মহড়া প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় নৌবাহিনীর কমান্ডো দল, হেলিকপ্টার, পেট্রোল এয়ার ক্রাফট, যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা বঙ্গবন্ধু ও সোয়াডস ঘাঁটি নির্ভীকসহ একাধিক জাহাজ ও পেট্রোল বোট অংশগ্রহণ করে। এ সময় ব্যাপক গোলা বর্ষণ, বিস্ফোরণ এবং অন্যান্য বিধ¡ংসী সক্ষমতাসহ সন্ত্রাস দমনে নৌবাহিনীর বিভিন্ন কৌশল ও নৈপুন্য প্রদর্শিত হয়। মহড়ার শেষ পর্যায়ে নৌবাহিনীর ১০টি কমান্ডো বোট স্টীম পাস্টের মাধ্যমে এবং দুটি হেলিকপ্টার ও দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট ফ্লাই পাস্টের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান প্রদর্শন করে। এর আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম নৌ ঘাঁটি বানৌজা ঈসাখানে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার এডমিরাল এম আখতার হাবীব তাঁকে স্বাগত জানান।

 কমিশনিং অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক শক্তিশালী ও সক্ষম ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে রুপান্তরে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রয়াসের কথা উল্লেখ করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী । তিনি যুদ্ধবহর বৃদ্ধির পাশাপাশি নৌবাহিনীর নিজস্ব বিমানঘাটিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়সমূহ গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেন। বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা ও দূর্যোগ মোকাবেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আধুনিক নৌবাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। সদ্য সংযোজিত ‘সমুদ্র অভিযান’, ‘স্বাধীনতা’ ও ‘প্রত্যয়’ যুদ্ধজাহাজ তিনটি দেশের সম্পদ রক্ষা, নিজ জলসীমায় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং বিশ্বশান্তি রক্ষায় আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা করেন। কমিশনিং অনুষ্ঠান উপলক্ষে নৌবাহিনীর সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন,

 সদ্য সংযোজিত নৌবাহিনীর এই তিনটি যুদ্ধজাহাজের মধ্যে বানৌজা ‘সমুদ্র অভিযান’ যুক্তরাষ্ট্র হতে এবং বানৌজা ‘স্বাধীনতা’ ও ‘প্রত্যয়’ গণচীন হতে সংগ্রহকৃত। বানৌজা সমুদ্র অভিযান বাংলাদেশ নৌবহরের ৯ম ফ্রিগেট স্কোয়াড্রনের দ্বিতীয় যুদ্ধজাহাজ। এই স্কোয়াড্রনের প্রথম যুদ্ধজাহাজ বানৌজা ‘সমুদ্র জয়’ ২০১৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশনিং করা হয়। ৩ হাজার ৩১৩ টন ওজন বিশিষ্ট জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১১৫ মিটার। জাহাজটিতে ২টি ডিজেল ইঞ্জিন এবং ২টি গ্যাস টারবাইন রয়েছে যার সাহায্যে এটি ঘন্টায় প্রায় ২৯ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। অপরদিকে, গণচীন হতে সংগ্রহকৃত করভেট ক্লাসের মিসাইল ফ্রিগেট ‘স্বাধীনতা’ ও ‘প্রত্যয়’ জাহাজ দুটি দৈর্ঘ্যে ৯০ মিটার যা সর্বোচ্চ ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। আধুনিক ক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজ দুটি বিমান বিধ¡ংসী কামান, জাহাজ বিধ¡ংসী মিসাইল এবং সমুদ্র তলদেশের টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম।

 কমিশনিং অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবর্গ, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা, সেনা ও বিমান বাহিনীর প্রধানগণ, দেশী বিদেশী কূটনীতিকসহ সামরিক ও বেসামরিক উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত: